মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে গরু চুরি করে পালানোর সময় পুলিশের অভিযানে আন্তঃবিভাগীয় ডাকাত দলের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের মৃত নুরমোহাম্মাদের ছেলে ও আন্তঃবিভাগীয় কুখ্যাত ডাকাত আলম (৪৫) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মশরীভোজা গ্রামের বোধন মন্ডলের ছেলে পালাশ (৪০)।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ওই দুই ডাকাত সদস্যদের আটক করা হয়। ওই দিন রাত ১২টার সময় উপজেলার পালপাড়া গ্রামের অনিল চন্দ্র পালের ছেলে ও অনিক ড্রাগ হাউজের মালিক অনিক পাল তার দোকান বন্ধ করে নিজ বাসায় ফিরছিলো। অনিক তার বাড়ী নিকট পৌঁছলে একদল ডাকাত তার পথ রোধ করে দাঁড়ায়। এসময় ডাকাতদের হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে অনিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। আঘাত পেয়ে অনিক চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন বেরিয়ে আসে। লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা অনিককে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। বিষয়টি সাপাহার থানা পুলিশকে জানান স্থানীয়রা।
সংবাদ পেয়ে ওসি তারেকুর রহমান ও তদন্ত ওসি আলমাহমুদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোপনে অভিযান পরিচালনা করেন। এমতাবস্থায় রাত্রি ৩টার দিকে ডাকাত দলের সদস্যরা উপজেলার উঁচাডাঙ্গা গ্রাম হতে একটি গরু ও একটি বাইসাইকেল ডাকাতি করে ভুটভুটিতে উঠিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানতে পেরে টহলরত পুলিশ পিক-আপ ভ্যান দিয়ে তাদের ভুটভুটির পথ রোধ করে। ডাকাত সদস্যরা পুলিশ ভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে পালাবার চেষ্টা করলে ভুটভুটি উল্টে যায়। ভুটভুটিতে থাকা ডাকাত দলের সদস্যরা দিক বিদিক ছুটে পালাতে চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের পিছু ধাওয়া করে। ভুটভুটির আঘাতে আহত ডাকাত পলাশকে ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র ১টি হাসুয়া ১টি শাবল ও ১টি সুচালো লোহার রড সহ তাকে আটক করে। অপর কুখ্যাত ডাকাত আলম পায়ে আঘাত পেয়েও দৌড়ে গিয়ে তাজপুর গ্রামের একটি পুকুরে ঝাপ দেয়। এসময় পুলিশের দল পানি হতে তাকে তুলতে ব্যর্থ হলে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলির শব্দে তাজপুর গ্রামের জনগন জেগে যায়। পরে সাধারণ লোকজন ও পুলিশ সদস্যারা সারা পুকুরটিকে ঘিরে ফেলে ডাকাত আলমকে পুকুর থেকে তোলার চেষ্টা করে। পুলিশ ও জনগনের সকল চেষ্টা ব্যার্থ হলে পুলিশের দুইজন কনষ্টবল পুকুরে নেমে আলমকে ধরে উপরে তোলেন। তাদেরকে আহত অবস্থায় সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। আটক আলম ও পলাশের দেয়া তথ্য মতে আরও দুইজন সদস্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে সাপাহার থানায় একটি মামলা দায়ের প্রস্ততি চলছে বলেও জানান অফিসার ইনচার্জ তারেকুর রহমান সরকার।
Leave a Reply